সারোয়ার হোসেন,তানোর: রাজশাহীর তানোর-গোদাগাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন পর বইছে ঐক্যর হাওয়া। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নেতাকর্মীরা নিজেদের মধ্যে ঐক্যর প্রয়োজনীয়তা অনুধাবণ করে ঐক্যবদ্ধ হতে শুরু করেছে। এতে নেতাকর্মী-সমর্থকদের মাঝে বইছে ঐক্যর সু-বাতাস।জানা গেছে, স্থানীয় সাংসদ আলহাজ্ব ওমর ফারুক চৌধুরীর নেতৃত্বে ও তৎপরতায় উপজেলা আওয়ামী লীগের নতুন মুখের আদর্শিক নেতৃত্ব উপহার দেয়া হয়েছে। এদিকে নতুন নেতৃত্বের পর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে রাতারাতি হয়েছে নাটকিয় পরিবর্তন ফিরেছে প্রাণচাঞ্চল্য। নেতাকর্মীরা ঐক্যর প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে দীর্ঘদিনের মান-অভিমান ভুলে একে-অপরকে কাছে টানতে শুরু করেছে। এতে তাদের মধ্য দীর্ঘদিনের বিরাজমান মান-অভিমান ও ক্ষোভ-অসন্তোষের বরফ গলতে শুরু করেছে। ব্যবসা-বাণিজ্যে, চাওয়া-পাওয়া-না পাওয়াসহ নানা কারণে যেসব নেতাকর্মীরা এতদিন নিস্ক্রীয় ছিল তারাও এমপির আহবানে সাড়া দিয়ে নতুন নেতৃত্ব নিয়ে নবউদ্দ্যেমে রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তবে এখানো কিছু রাজনৈতিক বেঈমান আওয়ামী লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে তৃণমুল নেতাকর্মীদের বিপদগামী করার অপতৎপরতা চালাচ্ছেন।কিন্তু সাংসদ মাঠে নামার পর বেঈমানদের সেই স্বপ্ন উবে গেছে।
স্থানীয় সাংসদের আহবানে সাড়া দিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাইনুল ইসলাম স্বপন, সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ প্রদিপ সরকার, উপজেলা চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না, ভাইস-চেয়ারম্যান আবু বাক্কার ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আবুল বাসার সুজন প্রমুখদের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে বইছে ঐক্যর হাওয়া।
জানা গেছে, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি গোলাম রাব্বানী ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল-মামুন এমপির বিরোধীতা করে পৃথক বলয় সৃস্টির নামে দায়িত্বশীল পদে থেকেও তারা সংগঠনকে শক্তিশালী করতে কোনো ভুমিকা তো রাখেইনি বরং জামায়াত-বিএনপির এজেন্ডা বাস্তবায়নে সৃস্টি করেছিল দলীয় কোন্দল, সাংগঠনিক অবস্থা ছিল নাজুক, ভেঙ্গে পড়েছিল চেইন অব কমান্ড, বিরাজ করছিল হ-য-ব-র-ল অবস্থা। তাদের এসব সংগঠন বিরোধী কর্মকান্ডের অভিযোগে তৃণমুলের দাবির মুখে কাউন্সিলে মাইনুল ইসলাম স্বপনকে সভাপতি ও প্রভাষক আবুল কালাম আজাদ প্রদিপ সরকারকে সাধারণ সম্পাদক করে নতুন নেতৃত্ব দেয়া হয়। এদিকে স্থানীয় সাংসদের আহবানে সাড়া দিয়ে আগামী সাধারণ নির্বাচন সামনে রেখে নতুন কমিটি আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কর্মকান্ড জোরদার, নিস্ক্রীয়দের সক্রীয় এবং সাংগঠনকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন পহেলা আগস্ট-২০২২ থেকে বছরব্যাপী কর্মসুচি ঘোষণা করেছে। ওদিকে তাদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়ায় দলের কোন্দল নিরসন হয়েছে, বেড়েছে নেতৃত্বের প্রতিযোগীতা, গতিশীল হয়েছে, সাংগঠনিক কর্মকান্ড। ইতিপূর্বে, তাদের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের জনসভায় তেমন লোক সমাগম হতো না, অথচ এমপির নেতৃত্বে এখন ওয়ার্ড কমিটির কর্মীসভা জনসভায় রুপ নিচ্ছে সৃস্টি হয়েছে গণজোয়ার। এতেই প্রমাণ হয় আওয়ামী লীগে কোনো সাংগঠনিক দুর্বলতা ছিল না বরং রাব্বানী-মামুন নেতৃত্বে থেকেও বিরোধী পক্ষের কাছে থেকে অবৈধ সুবিধা নিয়ে দলকে বিকিয়ে দিয়েছিল। এদিকে স্থানীয় সাংসদের আহবানে দলকে আরো বেশী শক্তিশালী ও সাংগঠনিক কর্মকান্ড গতিশীল করতে নানা কর্মসুচি হাতে নিয়েছে আওয়ামী লীগ। তানোরের দুটি পৌরসভা ও সাতটি ইউনিয়নে (ইউপি) শোকাবহ আগষ্ট মাস জুড়েই ছিল নানা কর্মসুচি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশে করোনা ভাইরাস শনাক্তের পর থেকে জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় সকল সাংগঠনিক কর্মসুচি স্থগিত রেখেছিল আওয়ামী লীগ। তবে পহেলা আগস্ট-২০২২ থেকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় প্রতিদিনই নানা কর্মসুচি আয়োজন করা হচ্ছে। সীমিত পরিসরে হলেও এসব কর্মসুচিতে উপাজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা এবং কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার পাশাপাশি কর্মসুচিতে ভাল উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এতে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ব্যাপক প্রাণচাঞ্চল্যর সৃস্টি হয়েছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনকে ঘষেমেঝে ঢেলে সাজানোর পাশাপাশি দলকে সাংগঠনিক ভাবে শক্তিশালী করার লক্ষ্য এসব কর্মসুচি ঘোষণা করা হয়েছে। এসব কর্মসুচির মধ্যে রয়েছে, প্রতিটি ইউনিয়ন, পৌরসভা ও উপজেলা কমিটির বিশেষ বর্ধিত সভা আয়োজন। এসব কর্মসুচিতে সাংসদ ওমর ফারুক চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাইনুল ইসলাম স্বপন, সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ প্রদিপ সরকার, উপজেলা চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না, ভাইস-চেয়ারম্যান আবু বাক্কার ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আবুল বাসার সুজন প্রমুখগণ উপস্থিত থেকে দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন।উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাইনুল ইসলাম স্বপন বলেন, এমপি মহোদয়ের আহবানে দলের সাংগঠনিক কর্মকান্ড জোরদার করতে পহেলা আগস্ট থেকে বছরব্যাপী কর্মসুচি ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি বলেন তাদের মুল লক্ষ্য দলকে সাংগঠনিক ভাবে আরো বেশী শক্তিশালী ও গতিশীল করে তোলা। উপজেলা চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না বলেন,আমরা একই পরিবারের সদস্য আমাদের মাঝে কোনো মতবিরোধ নাই আমাদের সকলের চাওয়া একটাই। আগামী দিনেও জাতীয় রাজনীতিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ফের সরকার প্রধান এবং স্থানীয় রাজনীতিতে আলহাজ্ব ওমর ফারুক চৌধুরীকে এমপি নির্বাচিত করা। গোদাগাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশীদ বলেন, বিশাল বড় বড় সভা সমাবেশ করে হাতে মাইক নিয়ে যে যাই বগি আওয়াজ দিক না কেন তানোর গোদাগাড়ী তথা রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর কোন বিকল্প নাই। আজ এমপির জন্য তানোর-গোদাগাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন সর্বোচ্চ গতিশীল ও শক্তিশালী সংগঠন হিসেবে পরিনত হয়েছে। এবিষয়ে আবুল বাসার সুজন বলেন, জাতীয় রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধু কন্যা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও জননেত্রী শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নাই, তেমনি স্থানীয় রাজনীতিতে আলহাজ্ব ওমর ফারুক চৌধুরী এমপির কোনো বিকল্প নাই। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে কোনো বিভাজন নাই, তিনি বলেন, তারা সকলে এক পরিবারের সদস্য তাদের অভিভাবক স্থানীয় সাংসদ। তিনি বলেন, একটি বিশেষ মহল আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে এখানো অপপ্রচার করছে। যা তাদের সব কর্মকান্ডের নথি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার হাতে রয়েছে।
Leave a Reply